মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার দীর্ঘদিন ধরে জারি থাকা জরুরি অবস্থা তুলে নিয়েছে, যা আসন্ন ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিকে ত্বরান্বিত করেছে। তবে এই নির্বাচন নিয়ে দেশজুড়ে বিরোধিতা চলছে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্ন উঠেছে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে সরিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সশস্ত্র সংঘাত, প্রাণ হারায় হাজার হাজার মানুষ। সেই সময় জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইং জরুরি অবস্থা জারি করে আইনসভা, নির্বাহী এবং বিচার বিভাগ—সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেন। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে তিনি নির্বাচনকে দেশটির রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার একটি উপায় হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
তবে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সাবেক এমপিদের নেতৃত্বাধীন বিরোধী গোষ্ঠীগুলো ইতোমধ্যে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ গত মাসে এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে এর সমালোচনা করেন।
ন্যাপিদোতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং বলেন, “আমরা প্রথম ধাপ সম্পন্ন করেছি। এখন দ্বিতীয় ধাপে পা রাখছি। ডিসেম্বরের নির্বাচনে যেন সব যোগ্য নাগরিক ভোট দিতে পারেন, সে জন্য প্রস্তুতি চলছে।” যদিও নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি, তবে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন শুরু হয়েছে এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, বুধবার সামরিক সরকার একটি নতুন আইন পাস করেছে, যেখানে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টায় জড়িতদের সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
গত বছরের জনশুমারির প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, দেশের ৫১ মিলিয়ন জনগণের মধ্যে ১৯ মিলিয়নের তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। এতে বোঝা যায়, চলমান নিরাপত্তা সংকটের মধ্যেই নির্বাচনের আওতা কতটা সীমিত হতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
এসএকে/