গাজী মুহাম্মদ সানাউল্লাহ রাহমানী
আল্লামা সুলতান যওক নদভী। শ্রদ্ধা ও ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে উচ্চারণ করতে হচ্ছে- রাহিমাহুল্লাহ। গতকাল পর্যন্ত এই মনীষী আলো ছড়িয়ে গেছেন পৃথিবীর উপরে। তাঁর জ্ঞানের আলো, তাঁর উদ্ভাসিত প্রেমময় হৃদয়ের সবটুকু প্রভা তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন তাঁর শিক্ষার্থীদের মাঝে। তাঁর হাতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য কীর্তিমান শিক্ষার্থী। যারা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে আছেন এক একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে।
আল্লামা সুলতান যওক নদভীকে আমি বাংলাদেশের আবুল হাসান আলী মিয়া নদভী মনে করতাম। বাংলাদেশের আলী তানতাবী মনে করতাম। অথবা বাংলাদেশের ইউসুফ আল কারদাবী ভাবতাম। এটা আমার একান্ত অনুভব। অনুভূতির মিনারে শ্রদ্ধার ভাস্বরে তিনি এমনটাই ছিলেন আমার কাছে। আমার এই মতের সাথে আপনার একমত হওয়া আবশ্যক নয়।
দেশের কওমি মাদরাসা শিক্ষা সংস্কারে প্রথম যারা সাহসের আঙ্গুল উত্তোলন করেন, তাদের মাঝে অন্যতম আল্লামা সুলতান যওক নদভী। এদেশের কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের আরবি ভাষার এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবার যে সংগ্রাম চলছে, বিগত পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে এর পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব আল্লামা যওক নদভী রহ.।
তিনি চলে গেলেন, আমাদের এতিম করে, অসহায় করে। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ থেকে ইলমি আকাশ থেকে প্রজ্জ্বলিত এক নক্ষত্র হারিয়ে গেল। গোটা বিশ্বের মাঝ থেকে আরবি সাহিত্যের এক নুজুম হারিয়ে গেল। কবির ভাষায় বলতে হয়, এমন মানুষ মিলবে না আর এ ধরায়...।
কীর্তিমান এই মনীষার সাথে আমার ব্যক্তিগত অনেক স্মৃতি রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের অনেক সোনালি মুহূর্ত আমি ধারণ করে রেখেছি হৃদয়ের সোনালি ক্যানভাসে। তাঁর কোমল হাত দুটি স্পর্শ করার অনন্য মুহূর্তগুলো আজ হৃদয়ে ঝরছে শোকের বৃষ্টি হয়ে, গল্পগুলো কাঁদাবে, ভাবাবে এবং তার জন্য মাগফেরাতের দোয়া কামনায় হাত উঠাবে, মহা মহিমের দরবারে, নীল আকাশের পানে...।
ঢাকায় বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম আজ, একটা আন্তর্জাতিক সেমিনার, হজ আয়োজন, সমাবেশ এবং টিভি প্রোগ্রাম। নয়তো রওনা হতাম দারুল মাআরিফের পথে। দূর থেকে শোকযাত্রায় শামিল হচ্ছি, হৃদয়ের কান্না নিয়ে আর অন্তরের মর্ম ব্যথা নিয়ে...।
লেখক: ইসলামি আলোচক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব
এনএইচ/