সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

ইসলাম গ্রহণের পর নামাজ পড়ার অনুভূতি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

|| মুহাম্মদ রাজ ||

জীব ও প্রাণীর ন্যায় আল্লাহ পাক নামাজের একটি দেহ ও রুহ দান করেছেন। অন্তরের উপস্থিতি এবং নিয়ত হলো নামাজের রুহতুল্য। আর কিয়াম ও আউযুবিল্লাহ তথা কিরাত হলো নামাজের দেহ।

একবার একজন সালাফ এক লোককে নামাজের অস্থিরতায় ভুগতে দেখে বলেন, "যদি লোকটির অন্তর বিনম্র হয়, তাহলে তার দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গও বিনয়াবত হবে।

মুজাহিদ রহ. বলেন, "চক্ষ অবনত রাখা আর খুব বিনয়ের সাথে আল্লাহর সামনে ঝুকে পড়া হলো খুশু। মুসলিম বিন ইয়াসার রহ. বলেন, " মাথা ঝুঁকানো হলো খুশু।"  হযরত আলী রাযি. বলেন, "এদিক ওদিক না তাকানো হলো খুশু।"

প্রিয় ভাইয়েরা, উপরের সমস্ত বাক্যের মূল কথাটি আমি মনে করি, যখন অন্তর বিনম্র হয়ে যায়, তখন শ্রবণ, দৃষ্টি, মুখমন্ডল সহ সকল অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ ও তাদের কাজকর্ম এমনকি মুখের কথাও বিনম্র হয়ে যায়।

আবু হুরাইরা রা. বলেন,  "তোমাদের কেউ যখন নামাজ আদায় করবে তখন এদিক সেদিক তাকাবে না কারণ, সে তখন একান্তে তার রবের সাথে কথা বলছে। তার রব তার সামনে আছেন। তিনিও এদিক ওদিক না তাকিয়ে তার সাথে কথা বলছেন।"

আল্লাহ তায়ালা ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়াকে পাঁচটি বিষয়ের যে আদেশ করেছিলেন তার মধ্যে একটি হলো,"আল্লাহ তায়ালা তাঁর চেহারা নামাজির চেহারার দিকে নিবিষ্ট করে রাখেন, বান্দা নামাজে এদিক সেদিক না তাকানো পর্যন্ত।

হাদিস শরীফে এসেছে, "মানুষ যখন নামাজ পড়তে শুরু করে আল্লাহ পাক ফেরেশতাদের বলেন, পর্দা উঠিয়ে দাও। কিন্তু যখন মুসল্লি এদিক ওদিক তাকায় তখন বলেন, পর্দা ফেলে দাও।"

হযরত আশরাফ আলী থানবী রহ. এর কিতাবে পড়েছি, তিনি বলেন,  প্রত্যেক আমলেই ভালোবাসা সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পরীক্ষামূলক দেখ, দূরে কোথাও কোনো ব্যাক্তির নিকট গেলে তার সাথে ভালোবাসা হয়ে যাবে। হতে হতে এমন সম্পর্ক হবে যে, তাকে ছাড়া আর কিছুই ভালো লাগবে না। এমনি ভাবে নামাজ আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ ও সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম। এ কারণে নামাজ কে বলা হয় মুমিনের মেরাজ। নবীজি সা. মেরাজে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। সুতরাং কেউ যদি চায় আল্লাহর সাথে মোলাকাত ও সাক্ষাৎ করে বিশেষ নৈকট্য লাভ করবে সে যেন শর্ত মোতাবেক নামাজের প্রতি পূর্ণ গুরত্বারোপ করে।

আহ! হা!  এক বুজুর্গকে জিজ্ঞাসা করা হলো নামাজে আপনার কোন জিনিস স্মরণ হয়? বুজুর্গ বলেন, নামাজ থেকে প্রিয় আর কি আছে যা আর স্মরনণে আসতে পারে??

হযরক হাজি ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কি রহ. বলেন, আচ্ছা কোন বাদশাহ যদি দরবারে কারো উপর রাগ হন তাহলে কি দ্বিতীয়বার সে লোক দরবারের কাছেও যেতে পারবে? না কখনো না। সুতরাং এক নামাজ পড়ার  পর দ্বিতীয় নামাজে মাসজিদে হাজির হওয়ার তাওফিক হয়েছে। তাহলে বুঝে নাও, তোমার প্রথম নামাজ কবুল হয়েছে, তুমিও মকবুল হয়েছো।

হযরত ওরওয়াহ ওছকি রহ. একটি কিতাবে বলেন, দুনিয়াতে তো আল্লাহর সাক্ষাৎ হবে না। নামাজের মাধ্যমে দেখার নামান্তর তো হয়।

হযরত হাতেম আছম রহ. বলেন, নামাজের সময় হলে জাহেরি ওজু করি এবং বাতেনি ওজু করি। পানি দ্বারা জাহেরি ওজু আর তাওবার দ্বারা বাতেনি ওজু করি।

এক বুজুর্গ বলেন, "নামাজ আখেরাতের কাজ। যখনি নামাজে দাঁড়াই তখন দুনিয়ার কোনো খবর থাকে না। দুনিয়া থেকে বেরিয়ে যাই।

নামাজের সময় ব্যক্তির মন পবিত্র থাকে, শান্ত থাকে ফলে ব্যক্তির অঙ্গপ্রতঙ্গগুলোর কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়, ব্যক্তির জীবনীশক্তি বৃদ্ধি পায় যা ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার বহিঃপ্রকাশ।  জীবনের সব হতাশা, অশান্তি, বিষণ্নতা, অস্থিরতার নিগড় থেকে বেরিয়ে মানসিক শান্তি লাভ করে। এভাবে পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ আদায়কারী একজন মুসলিম ব্যক্তির শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে। আল্লাহতা'আলা আমাদের সবাইকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে পড়ার তাওফিক দান করুন।

পরিচালক, হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ

টিএ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ