সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

চামড়া সিন্ডিকেট চক্র ভেঙে দিতে সোচ্চার হতে হবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুহাম্মদ নূর হোসাইন ||

আর ক’দিন পরেই পবিত্র কুরবানির ঈদ। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের ওপর এ ঈদে কুরবানি ওয়াজিব হয়, যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে গরু, ছাগল, উট, মহিষ, দুম্বা ইত্যাদি পশু কুরবানি করা হয়ে থাকে। এ সকল পশুর চামড়া থেকে দেশে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। বর্তমানে দেশের রপ্তানি খাতের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থান দখল করে আছে চামড়া শিল্প, যা পোশাক শিল্পের পরেই অবস্থান করছে।

তবে দুঃখজনকভাবে এই সম্ভাবনাময় শিল্প এখন ধ্বংসের মুখে। ২০১৩ সালে গরুর কাঁচা চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ৮৫-৯০ টাকা, যা ২০২০ সালে নেমে আসে ৩৫-৪০ টাকায়। ২০২১ সালে সরকার প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ৪০-৪৫ টাকা নির্ধারণ করলেও বাস্তবে সেই দামেও চামড়া বিক্রি হয়নি। ২০২৩ সালেও একই ধারা অব্যাহত ছিল, যখন চামড়ার মূল্য আরও কমে যায়। ২০২৪ সালে সরকার নির্ধারিত দাম ঘোষণা করলেও বাস্তব বাজারে সেই দামের প্রতিফলন দেখা যায়নি।

এই অস্বাভাবিক দামের কারণে বিগত কয়েক বছর দেশে অনেক স্থানে চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলা বা পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। দেশের সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্যের এই অবস্থা আমাদের জাতীয় অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ। অথচ আমরা জানি, এই চামড়া থেকেই তৈরি হয় জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, মানিব্যাগ, জ্যাকেট, গ্লাভস, বেল্ট ইত্যাদি—যেগুলোর দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে থাকলেও চামড়ার দাম একেবারেই তুচ্ছ!

আমরা জানি, দেশের কওমী মাদরাসাগুলোতে লাখ লাখ সুবিধাবঞ্চিত, গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করেন। বিপুলসংখ্যক এই শিক্ষার্থীর লেখাপড়া, থাকা-খাওয়া তথা ভরণপোষণের জন্য সরকারি কোন বাজেট নেই। তাছাড়া সরকারি বাজেটের প্রয়োজনও মনে করেন না সংশ্লিষ্টরা। এসব মাদরাসাগুলো দেশের সাধারণ জণগণের টাকায় পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষকরে রমজান উপলক্ষে যাতাক-ফেতরা, আর কুরবানী উপলক্ষে চামড়া বিক্রির টাকা কওমী মাদরাসার আয়ের অন্যতম উৎস।

জানা যায়, একসময় কুরবানীর পশুর চামড়া থেকে কমপক্ষে তিন থেকে চার মাসের ব্যয় মেটানো সম্ভব হতো।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পরিকল্পিতভাবে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটকারী এই শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সিন্ডিকেট করে পরিকল্পিতভাবে চামড়ার দামে বিপর্যয় ঘটিয়ে যারা গরিব, এতিম ও অসহায়দের হক নষ্ট করছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

তাছাড়া দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তা ও চামড়া শিল্পকে রক্ষায় দেশের সর্বস্তরের জনগণকে সোচ্চার হতে হবে। চামড়া শিল্প থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কার্যকরী ভুমিকা নিতে হবে এবং সিণ্ডিকেটকারীদের বিরুদ্ধে সরকার, প্রশাসন ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। 

লেখক: সিনিয়র সহ-সভাপতি, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ