সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

ফজরের নামাজে উপস্থিতি বাড়াতে চায়ের চমৎকার উদ্যোগ—‘আলফজর টি’  


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||

একসময় গ্রামের মসজিদগুলোয় ফজরের জামাতে ভিড় থাকত চোখে পড়ার মতো। শহরেও ছিল সাড়া। কিন্তু এখন? আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, স্মার্টফোন-নির্ভর রাতজাগা জীবনধারা ধীরে ধীরে আমাদের এই মৌলিক কর্তব্য থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। অথচ রাসূল (সা.) ফজরের জামাতকে দিয়েছেন অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদা—যার তুলনা আর কোনো নামাজে নেই।   এই ক্রমহ্রাসমান চিত্র শুধু একেকটি মসজিদের নয়, বরং একটি জাতির আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য হ্রাসেরও ইঙ্গিত। তাই প্রশ্ন জাগে—আমরা কি আবার জাগবো ফজরের আলোতে? নাকি আমাদের মসজিদগুলো ভোরে আরও নিঃসঙ্গ হয়ে উঠবে? 

ফজরে মুসল্লি বাড়াতে পাশাপাশি মসজিদভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে মেহমানদারি ও আধ্যাত্মিক আড্ডা আবারও ফিরে আনা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে ফজরের নামাজের পর মুসল্লিদের মাঝে আন্তরিকতা ও উপস্থিতি বাড়াতে দেশের মসজিদ গুলোতে শুরু করা যেতে পারে নতুন এক সুন্দর উদ্যোগ— ‘আলফজর টি’।

এই উদ্যোগে সপ্তাহে নির্দিষ্ট এক-দু’দিন বা প্রতিদিন ফজরের নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিদের নিয়ে বসে চা ও হালকা নাস্তার আয়োজন করা হবে। ইতিমধ্যে ঢাকার একটি মসজিদে মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানীর নেতৃত্বে শুরু হয়েছে এমনই এক অনন্য আয়োজন। এই আয়োজনে কখনো বিস্কুট, কখনো সেমাই থাকে। সাথেই থাকতে পারে দ্বীনি আলোচনা, জিকির, কোরআন তিলাওয়াত বা ছোট আকারের তালিম।

এ আয়োজনে প্রতিটি মুসল্লি হয়ে ওঠবেন স্বতঃস্ফূর্ত অংশীদার। কেউ আনবেন সেমাই, কেউ বেকারির বিস্কুট, কেউ চা, খেজুর বা অন্য্ কিছু। আর এই বিনিময়ে নিশ্চিত গড়ে ওঠবে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভালোবাসা এবং মসজিদমুখী সমাজ।

একসময় আমার মসজিদেও এই আয়োজন ছিল স্বতঃস্ফুর্তভাবে। বিশেষ করে মসজিদের তাবলিগ জামাতের সাথি ভাইয়েরা এই আয়োজন করতাম। তালিম-মাশওয়ারার পরে হতো চায়ের আড্ডা। শরিক করতাম সাধারণ মুসল্লিদেরও। ফজরের আগে কেউ একজন ফ্লাস্কে কখনো রং চা কখনো দুধ চা বানিয়ে আনতেন। সাথে থাকতো বিস্কুট, কখনো বা মজাদার খেজুর। কিন্তু কালের পরিক্রমায় নানান কারণে আমাদের এই সুন্দর এবং কারযকর উদ্যোগটিও হারিয়ে গেছে। 

এক সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক উদ্যোগ আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব, এমনটাই মনে করছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফজরের পর ২০ মিনিটের এই সম্মিলিত সময়টা শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক বন্ধনও দৃঢ় করে। তরুণদের জন্যও এটি হতে পারে একটি আকর্ষণীয় আহ্বান—নামাজ, নাস্তা আর জ্ঞানের চা-চক্র।

ফজরের সময় মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বাড়াতে চাইলে এ রকম ছোট কিন্তু হৃদয়গ্রাহী উদ্যোগ হতে পারে উদ্দীপক। দেশের প্রতিটি মসজিদেই এমন আয়োজন শুরু হোক—এই হোক ‘আলফজর বিপ্লব’।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ