||মুফতি তারেকুজ্জামান||
বর্তমানে লক্ষ্যহীন জীবনযাপনের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। বস্তুবাদী দর্শনের প্রভাবে মানুষ এখন ভোগবিলাসিতার দিকেই অধিক ঝুঁকছে। ফলে জীবনের কোনো বিশেষ লক্ষ্য না রেখে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে প্রচুর সময় নষ্ট করছে। ইউটিউব-ফেসবুকের অর্থহীন শর্টস ও রিলস দেখে সময় পার করছে। এভাবে ক্রমশ জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গাফিল এক প্রজন্ম গড়ে ওঠছে।
বিশেষত কিশোরশ্রেণি, যুবসম্প্রদায় ও ছাত্রসমাজের অবস্থা বেশি ভয়াবহ। ছাত্ররা পড়াশোনায় যেমন দুর্বল, তেমনই জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের ব্যাপারে প্রচণ্ড রকমের গাফিল। ফলে বছর তো পার হচ্ছে, কিন্তু অর্জন ও যোগ্যতার ঝুলি শূন্যপ্রায়। অন্যান্য অঙ্গনের অবস্থাও বেশি সুবিধার নয়। সর্বত্রই বিশৃঙ্খলা বিরাজমান।
আজকের যুগে সফলতা অর্জন করতে হলে নফসকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বর্তমানে গুনাহের আসবাব ও সময় নষ্ট করার উপকরণ এত বেশি যে, জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের ব্যাপারে সচেতন মানুষের পক্ষেও এসব থেকে বেঁচে থাকাটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই লক্ষ্যপানে পথ চলতে গিয়ে নানা বাধা ও প্রলোভন আসবে, কিন্তু সেদিকে ফিরেও তাকানো যাবে না। আপনার অভীষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে ডানেবামে না তাকিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলুন।
মানুষ হাজারো সমালোচনা করুক, আপনি জাস্ট নীরব থাকুন এবং নিবিষ্টমনে চলতে থাকুন। নিশ্চিন্ত থাকুন, দিন শেষে সমালোচকরা ব্যর্থ হবে এবং বিজয়ের শেষ হাসি আপনিই হাসবেন ইনশাআল্লাহ।
বস্তুত যদি জীবনে সফলতা চান তাহলে আপনাকে একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। নির্দিষ্ট টার্গেটের দিকে আপনাকে নিরন্তর এগিয়ে যেতে হবে। ডান-বাম না দেখে সোজা পথে চলতে হবে। মানুষ নানা কথা বলবে, সমালোচনা করবে, কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না। আপনি সফলতার দিকে এগিয়ে গেলে দেখতে পাবেন কিছু মানুষ হিংসা করছে, কিছু লোক আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে অথবা আপনার সমালোচনায় পিছনে লেগেছে। আপনি যদি এগুলোর প্রতি মনোযোগী হন কিংবা এসব বিষয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট করেন তাহলে আপনার সফলতা এখানেই থেমে যাবে। সফলতার চূড়া দেখতে পেয়েও আপনি সেখানে পৌঁছুতে ব্যর্থ হবেন। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।
লেখক: চিন্তক আলেম ও গ্রন্থ প্রণেতা
এনএইচ/