আবুল ফাতাহ কাসেমী
ফরিদাবাদ মাদরাসাসহ এ দেশের সকল ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মাদরাসাগুলো ইখলাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। এসব মাদরাসার সর্বজনগ্রাহ্যতা এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ।
বুড়িগঙ্গার কোল ঘেঁষে দীনের যে দীপ্ত আলো জ্বালিয়েছেন সদর সাহেব আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.), তা এখনো সমুজ্জ্বলভাবে বিদ্যমান।
১৩৭৫ হিজরী মোতাবেক ১৯৫৬ সালে শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.) এ মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামকরণ করেন হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কীর নামে। প্রতিষ্ঠানের প্রথম মুরুব্বী ও মুতাওয়াল্লী ছিলেন তিনি নিজেই এবং মুহতামিম ছিলেন তাঁর সহপাঠী মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহ.। উল্লেখ্য, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে এই মাদরাসা থেকেই আত্মপ্রকাশ করে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, কখনোই কোনো মাদরাসা ছাত্র নির্ণয়ের ক্ষেত্রে শতভাগ নিশ্চিত হতে পারেনি। দারুল উলুমে থেকেও অনেককে চরম অসদাচরণে লিপ্ত হতে দেখা গেছে। আর সেখানে ফরিদাবাদ?!
ফরিদাবাদের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা অনেকে আজকাল ফেসবুকে চরম অন্যায় ও ভিত্তিহীন মন্তব্য করছে। অনেকে জেনে বা না জেনে তাদের কথায় সহমত প্রকাশ করছে।
পূর্ববর্তী আকাবিরগণ যে মানহাজের (মতাদর্শ) উপর এই মাদরাসাকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন, আলহামদুলিল্লাহ আজও সে মানহাজের (মতাদর্শ) উপর চলমান রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অনেক গুণী ও আত্মিক ব্যক্তিবর্গ এবং আল্লাহর অজ্ঞাতনামা বান্দারা এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন। প্রবীণ-নবীন একদল দক্ষ শিক্ষক দিনরাত শ্রম দিয়ে এই উম্মাহর আমানত—আতফালুল মুসলিমীনদের (মুসলিম শিশু) পরিচর্যা করছেন।
আমার ব্যক্তিগত অভিমত, এখানে এমন অনেক আল্লাহভীরু ব্যক্তি রয়েছেন, যাদের তাহাজ্জুদের নামাজও কাজা হয় না—যা এই যুগে খুবই বিরল। প্রতিষ্ঠানটির নিম্নস্তরের শিক্ষক থেকে মুহতামিম সাহেব পর্যন্ত সকলেই আল্লাহভীরু ও দায়িত্বশীল।
আমাদের অধঃপতনের চিত্র এতটাই ভয়াবহ যে, এখন আমরা কেবল অনুমানের ভিত্তিতে একটি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারেও যাচ্ছেতাই মন্তব্য করতে দ্বিধা করি না! অপ্রাসঙ্গিক দলিল তুলে যে কারোর সম্মানহানি করতে কুণ্ঠাবোধ করি না! আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
আমি নিজে দুই বছর চোখ-কান খোলা রেখে এই জামিয়ার ছায়ায় অবস্থান করেছি। বর্তমানে যা বলা হচ্ছে তার সামান্যতমও আমি অনুভব করিনি।
গত কয়েকদিন ধরে অনেকে যেসব কথা বিভিন্ন মাধ্যমে বলছেন, অথবা যাঁরা এতে সায় দিচ্ছেন—তাদের প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ, আল্লাহকে ভয় করুন। ইনসাফ বজায় রাখুন। যদি কিছু বলার প্রয়োজন অনুভব করেন, তা যেন ন্যায়বিচার ও দায়িত্বশীলতার সাথে বলা হয়।
লেখক: লেখক ও মুহাদ্দিস, জামিয়া কাসেম নানুতবি ঢাকা
এমএইচ/