মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী
বিয়ে করা সুন্নত, ওয়াজিব, ফরজ এবং স্থান কাল পাত্র বিশেষ বিয়ে করা হারাম। একাধিক বিয়ে বা চার বিয়ে সুন্নত প্রমাণ করা খুবই কঠিন, সুতরাং চার বিয়ে সুন্নত বলে প্রচার করা বিনোদন ছাড়া আর কিছুই নয়। একাধিক বিয়ে বা চার বিয়ে নিয়ে হাসি তামাশা করা মোটেও আদবের মধ্যে পড়ে না। বিয়ে এক ধরনের হালাল মুআমালা এবং ইবাদতও বটে। শর্তসাপেক্ষে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সামর্থ্য থাকলে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে, চার বিয়েরও অনুমতি ও সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
মুহতারাম মাওলানা মুফতি তারেক মাসুদ আমার জানা মতে একজন বিজ্ঞ আলেম। তার জ্ঞানের গভীরতাও রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে তার সাথে আমার পরিচয় নেই। বহির্বিশ্ব থেকে একজন মেহমান বাংলাদেশে এলে তাকে সম্মান করা, ইকরাম করা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু তিনি এমন কোনো বিষয় অবতারণা না করাই ভালো যা দৃষ্টিকটু এবং হাশি তামাশায় পরিণত হয়। ইসলামে বিনোদনের মাপকাঠি এবং সীমারেখা রয়েছে। একাধিক বিয়ে নিয়ে পাবলিক প্লেসে অতিমাত্রায় আলোচনা করার কারণে নারীবাদী নাস্তিক তাসলিমারা আমাদেরকে নারীলোভী তকমা দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।
১৯৯৩ সনের কথা। দুবাই শহরের লাইব্রেরিতে একটি কিতাবের ওপর আমার নজর পড়ল— ‘حکمة کثرة الازدواج’ দেশে এসে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কিতাবটি সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে লাইব্রেরিতে দাঁড়িয়ে যতক্ষণ কিতাবটি মুতালা'আ করেছিলাম সেখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রিয় নবীজী সা.-এর একাধিক বিয়ের হেকমত বা কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। সাধারণ জনগণের দ্বিতীয় বা একাধিক বিয়ের বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি।
হজরত হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহ. নিজে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছিলেন— ‘হুজুর! দু' বিয়ের দরজা খুলে দিলেন?’ উত্তরে থানবী রহ. বলেছিলেন- ‘না ভাই, দু' বিয়ের দরজা বন্ধ করে দিয়েছি! আমার তরমুজ কাটা, দাড়িপাল্লায় উঠানো এবং সমান ভাগে ভাগ করার দৃশ্য অবলোকন করার পর দ্বিতীয় বিয়ে তো দূরের কথা, দ্বিতীয় বিয়ের নামও নেবে না কেউ।’
হজরত মুফতী সাহেবের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা আছেন বিষয়টি তাঁকে অবগত করার অনুরোধ করছি। মহান আল্লাহ তায়ালা মাওলানার ইলম, আমল, আখলাকে বারাকাহ দান করুন।
লেখক: সিনিয়র মুদাররিস, দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম, হাটাহাজারী
এমএইচ/