সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

রাউজানে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হচ্ছেন আলমগীর মাসউদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বিশিষ্ট আলেম, সমাজসেবক এবং শিক্ষানুরাগী আলমগীর মাসউদ। সম্প্রতি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আমির মাওলানা মামুনুল হক আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে রাউজান আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন।

আলমগীর মাসউদ একজন সুপরিচিত আলেম, দানশীল ব্যক্তি এবং মানবকল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ সমাজ সংস্কারক। দীর্ঘ সময় প্রবাস জীবনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি, তিনি নিজ জন্মভূমি রাউজানের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

১৯৭১ সালে রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের গোট্টারকুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আলমগীর মাসউদ। তার পিতা মরহুম কবির আহমদ ছিলেন একজন সৎ ও নির্ভীক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত ছিলেন এবং হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা হারুন রহ.-এর শিষ্য ছিলেন।

শিক্ষাজীবনে আলমগীর মাসউদ স্থানীয় মক্তব ও সুলতানপুর এমদাদুল ইসলাম মাদরাসা থেকে পাঠ শুরু করে, পরে দারুল উলূম হাটহাজারী থেকে ১৯৯২ সালে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি সাধারণ শিক্ষায় বি.এ (অনার্স) এবং ডিপ্লোমা ইন আরাবিক ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে, তিনি মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণায় নিয়োজিত।

আলমগীর মাসউদ শুধু একজন আলেম বা শিক্ষকই নন, বরং একজন সমাজ সংস্কারকও। ১৯৯৯ সালে তিনি নিজ গ্রামের আধুনিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আনোয়ারুল উলূম মডেল ইনস্টিটিউট’, যা পরবর্তীতে জামিয়া আরবিয়া আনোয়ারুল উলূম (হেফজখানা ও এতিমখানা)-তে রূপান্তরিত হয়। নারীদের জন্য ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘জামিয়া উম্মে রোকেয়া’ মহিলা মাদরাসা।

তাঁর নেতৃত্বে রাউজানের গোট্টারকুল গ্রামটি ‘আরবনগর’ নামকরণ করা হয়, যা সামাজিক সচেতনতার বৃদ্ধি এবং সংস্কৃতির উন্নয়নের একটি উদাহরণ হিসেবে পরিচিত। তিনি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আল-মাসউদ ফাউন্ডেশন’, যা অসহায়, হতদরিদ্র, এতিম এবং প্রান্তিক জনগণের জন্য সাহায্য প্রদান করে আসছে।

১৯৮৮ সালে ইসলামী ছাত্র সমাজ ও পরে নেজামে ইসলামের সাথে যুক্ত থাকার পর, দীর্ঘ প্রবাস জীবনের কারণে আলমগীর মাসউদ সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারেননি। তবে ২০১০ সাল থেকে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কার্যক্রমে যুক্ত হন এবং একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

তিনি জানান, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম, কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপে আমাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়।’

আলমগীর মাসউদ আরো বলেন, ‘রাউজানে গত একযুগ ধরে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া প্রভাব ছিল এবং ভিন্নমতের রাজনীতির জন্য তেমন কোনো সুযোগ ছিল না। তবে আমি আশাবাদী যে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সুষ্ঠু, অবাধ এবং অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ তৈরি হলে আমি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব, ইনশাআল্লাহ।’

আলমগীর মাসউদ বর্তমানে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন:

মহাসচিব – জমিয়তুল ওলামা কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, চট্টগ্রাম

সিনিয়র সহ-সভাপতি – জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা

সভাপতি – হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, রাউজান উপজেলা

সাধারণ সম্পাদক – রাউজান জমিয়তুল ওলামা

প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক – জামিয়া আরবিয়া আনোয়ারুল উলূম (হেফজখানা ও এতিমখানা), আরবনগর

প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক – জামিয়া উম্মে রোকেয়া (মহিলা মাদরাসা), আরব নগর, ডাবুয়া

এই প্রেক্ষাপটে, আলমগীর মাসউদের নির্বাচনী যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ