সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাবে একমত এনসিপি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঐকমত্যের বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন, যার পদ্ধতি এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি, ফলে একটি অস্পষ্টতা থেকেই গেছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপের বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

আখতার হোসেন বলেন, “আমরা কমিশন এবং আলী রীয়াজ স্যারের কাছে আহ্বান জানাবো, বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে যেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে খোলামেলা ও কার্যকর আলোচনা হয়। কমিশনের প্রস্তাবিত সময়সীমাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি এবং চাইছি যেন এটি তৎক্ষণাৎ কার্যকর হয়।”

আলোচনার শেষভাগে উচ্চকক্ষের গঠনপ্রণালী নিয়ে আলোচনা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে, ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে যেখানে প্রতিনিধিরা পিআর (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে, অর্থাৎ ভোটের অনুপাতে নির্বাচিত হবেন। উচ্চকক্ষে নিম্নকক্ষ থেকে আসা বিলগুলো সর্বোচ্চ দুই মাস আটকে রাখতে পারবে এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সিম্পল মেজরিটির কথা বলা হয়েছে।

তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানানো হয়েছে—সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষে টু-থার্ডস মেজরিটি নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে বলছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিতরা প্রকৃত নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। কিন্তু আখতার হোসেন বলেন, “সারা পৃথিবীতেই এফপিটিপি ও পিআর—উভয় পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বৈধতা রয়েছে। উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও জনগণের প্রতিনিধি।”

তিনি বলেন, “যেসব দল এক শতাংশ ভোট পেলেও তারা যেন একজন করে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধি দিতে পারেন, এতে বহুদলীয় গণতন্ত্রের আরও বিস্তৃত রূপ প্রতিষ্ঠিত হবে। আইন পাসের আগে উচ্চকক্ষে ব্যাপক আলোচনা হবে, যা এখন হয় না। এতে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সঠিক ত্রুটি ধরার সুযোগ থাকবে এবং সংসদের বাইরে জনপরিসরে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হবে।”

আখতার হোসেন বলেন, বর্তমানে যেভাবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে, সেটি যেন না হয়। বরং উচ্চকক্ষে যদি পিআর পদ্ধতিতে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা থাকেন, তাহলে সংবিধান সংশোধনের বিষয়টিও জনগণের বৃহত্তর প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে হতে পারবে।

তিনি বলেন, “মোটাদাগে আমরা উচ্চকক্ষ চাই। এখন অনেকে বলছেন, পিআর পদ্ধতিতে হলে তারা উচ্চকক্ষ চান না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—তারা আদৌ উচ্চকক্ষ চান কিনা? আমরা বিশ্বাস করি, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব—১০০ আসনের পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ—বহুদলীয় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে। একদল বা দুই দলের কর্তৃত্ব না থেকে বহু দলের অংশগ্রহণে পরিচালিত হবে দেশ। গণতন্ত্র চর্চার সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।”

আখতার হোসেন বলেন, “যখন নিম্নকক্ষে কোনো আইন পাস হয়, তখন তা আর কোথাও আলোচিত হয় না। কিন্তু উচ্চকক্ষে যদি বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা থাকেন, তাহলে সেই আইনের ত্রুটিগুলো চিহ্নিত ও পর্যালোচনা করা সম্ভব হবে। এতে একটি পরিশীলিত আইন প্রণয়নের পদ্ধতি চালু হবে এবং জনগণের দৃষ্টিসীমার মধ্যে থেকেই সিদ্ধান্তগুলো গৃহীত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, বাংলাদেশের রাজনীতি যেন হানাহানি ও সংঘাত থেকে সরে এসে নীতিনির্ভর ও সংলাপনির্ভর পথে পরিচালিত হোক। উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ থাকলে, তা সম্ভব।”

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ