নাজমুল হাসান।
রাগ এমন একটি আবেগ যা যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখা যায়, তবে তা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাত—দুইটাই নষ্ট করে দিতে পারে। ইসলাম রাগকে দমন করার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের জন্য কিছু অত্যন্ত কার্যকর কৌশল ও আমল রেখে গেছেন।
১. "রাগ করো না" — রাসূল (সা.)-এর সরাসরি উপদেশ
এক সাহাবি বারবার রাসূল (সা.)-কে বললেন, “আমায় উপদেশ দিন।”
প্রতি বার তিনি বললেন:
"লা তাগদাব" – রাগ করো না।" (সহিহ বুখারি)
প্রতিক্রিয়া না দিয়ে ধৈর্য ধারণ করাই প্রথম পদক্ষেপ।
২. আউযুবিল্লাহ বলা (আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম)
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“রাগ শয়তান থেকে আসে, আর শয়তান আগুন থেকে। তোমাদের কেউ যদি রেগে যায়, তাহলে সে যেন বলে: আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম।” (আবু দাউদ)
এই দোয়া মনের উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করে।
৩. অবস্থার পরিবর্তন করা
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“যদি কেউ দাঁড়িয়ে রাগ করে, সে যেন বসে পড়ে। যদি তাতেও রাগ না কমে, সে যেন শুয়ে পড়ে।” (আবু দাউদ)
এই কৌশল মন ও শরীরকে শান্ত করে।
৪. ওযু করে নেওয়া
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“রাগ আগুনের ন্যায়। আর পানি আগুন নিভায়। তাই রেগে গেলে ওযু করে ফেলো।” (আবু দাউদ)
ঠাণ্ডা পানি ও ওযু মানসিক উত্তেজনা কমায়।
৫. চুপ থাকা (সাইলেন্স থেরাপি)
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“রাগের সময় মানুষ অনেক কথা বলে ফেলে, যা তাকে অনুতপ্ত করে। তাই রাগের সময় চুপ থাকো।” (মুসনাদ আহমদ)
এক মুহূর্তের নীরবতা, এক জীবনের অনুশোচনা থেকে বাঁচাতে পারে।
৬. নিয়মিত জিকির ও দোয়া করা
প্রতিদিন অন্তত ১০০ বার
"আস্তাগফিরুল্লাহ", "সুবহানাল্লাহ", "লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ" – এসব পাঠ করুন।
এতে আত্মা প্রশান্ত হয়, রাগ ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসে।
৭. রাগের সময় আখিরাত মনে করা
নিজেকে প্রশ্ন করুন:
"এই রাগের জন্য কি আমি গুনাহ করব? নাকি জাহান্নামের পথে যাব?"
আখিরাতের ভয় রাগ কমিয়ে দেয়।
এনএইচ/