ইসলামে শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামী সমাজব্যবস্থায় শ্রমিকের প্রতি যথাযথ সম্মান ও সঠিক অধিকার প্রদান করা হয়েছে। নিচে ইসলামে শ্রমিকের মর্যাদা এবং অধিকার সম্পর্কে কিছু মূল দিক তুলে ধরা হলো:

১. শ্রমিকের মর্যাদা ও সম্মান
ইসলামে শ্রমিকের কাজ এবং পরিশ্রমকে উচ্চ সম্মানের চোখে দেখা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাদীসে বলেছেন:

“তোমরা যেন কেউ কাজের প্রতি অবহেলা না করো, কারণ মানুষ তার কাজের জন্যই সম্মানিত হয়।” (তিরমিজী)

এ থেকে বোঝা যায় যে, শ্রমিকের পরিশ্রমই তাকে সম্মানিত করে, এবং তার কাজের মূল্য দেওয়া উচিত। ইসলামে সকল মানুষের কাজকে সম্মানিত করা হয়েছে, বিশেষ করে যারা কঠোর পরিশ্রম করে তাদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে।

২. মজুরি (দুর্বল বা সস্তা শ্রমের শোষণ নিষিদ্ধ)
ইসলামে শ্রমের জন্য ন্যায্য মজুরি প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

“শ্রমিকের মজুরি তাকে কাজ শেষ করার আগে প্রদান করো।” (ইবনে মাজাহ)

অর্থাৎ, একজন শ্রমিক তার কাজ সম্পন্ন করার পর তার যথাযথ মজুরি প্রাপ্তির অধিকারী। শ্রমিকের প্রতি অন্যায় আচরণ বা তার অধিকার ক্ষুন্ন করা ইসলাম সমর্থন করে না।

৩. পরিশ্রমের প্রতি মূল্যায়ন
ইসলাম পরিশ্রমী মানুষের প্রতি সর্বদা সুনজর দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন:

“আর তারা (মুমিনগণ) বলবে, ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদের পরস্পরকে নেতা বানাও।’’ (সুরা আল-ফুরকান, ২৫:৭৪)

এ থেকে স্পষ্ট যে, আল্লাহ পরিশ্রমী ও সৎ ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেন এবং তাদের জন্য বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন।

৪. শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা
ইসলামে শ্রমিকের স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোন কর্ম পরিবেশ এমন হওয়া উচিত যাতে শ্রমিকের শরীরিক ক্ষতি না হয়। ইসলামে দাসদের জন্যও সাধারণভাবে শর্ত ছিল যে তাদের সঙ্গে সঠিক আচরণ করা হবে, তাদের শরীরিক ক্ষতি করা যাবে না, এবং তাদের খাদ্য ও আশ্রয় নিশ্চিত করা হবে।

৫. অধিকার সংরক্ষণ
শ্রমিকের অধিকার সংরক্ষণ ইসলামিক সামাজিক নীতির মূল অংশ। যদি কোনো শ্রমিক তার কাজের জন্য মজুরি পায় না বা তার অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তবে সে তাদের অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য দাবী করতে পারে। ইসলামে কর্মী বা শ্রমিকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করার অধিকারও আছে।

এনএইচ/