সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ বিবাহ একটি ইবাদত, এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশে আলেম প্রজন্ম-২৪-এর আপত্তি  জুলাই-আগস্টের ত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাইনি: মির্জা ফখরুল নারীবিষয়ক সুপারিশগুলো কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: জামায়াত আমির ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দূর না করে নির্বাচন দিলে সমস্যা সমাধান হবে না’  প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা সরকারি নিবন্ধন পেল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ ‘সিরাহ মিউজিয়াম’ চালু করছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী মহাসমাবেশ সফল করতে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে হেফাজত

মুমিনের জন্য যে দোয়াগুলো করা অনুচিৎ!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাসান মুরাদ।। দোয়া মুমিনের অবলম্বন।ইবাদতের প্রাণ।আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের মাধ্যম।রাসুল সা. দোয়ার প্রতি ছিলেন বিশেষ যত্নবান ।প্রিয় সাহাবাদের শিখিয়েছেন দোয়া ও দোয়ার আদব। জীবনের ছত্রে ছত্রে আছে দোয়া।

নিদ্রাভগ্ন থেকে নিদ্রমগ্ন পর্যন্ত মুমিনের জীবন দোয়াতে পূর্ন।এসব ছাড়াও আমরা হৃদয়ের ব্যকুলতা,মনের অভিব্যক্তি নিজ নিজ ভাষায় আল্লহার দরবারে প্রকাশ করি।তবে এসব চাওয়ার মাঝেও আছে কিছু না চাওয়ার বিষয়। না চাওয়াকে না চাওয়াই উচিত। রাসুল সা. সে না চাওয়া বিষয়গুলোও আমাদের জানিয়েছেন।আমাদের দায়িত্ব সেগুলো জেনে তা থেকে বিরত থাকা।

এক.একটি গজল মাঝ্যেমধ্যে শোনা যায়‘ দুনিয়াতে লও কাঁদাইয়া আখেরাতে কাঁদাইয় না।“ আল্লাহ যদি কাউকে দুনিয়াতে কাঁদান তবে কার সাধ্য আছে কাঁদার? সুতরাং এধরনের দোয়া,গজল সুন্নাহ পরিপন্থি। দুনিয়াতেই শাস্তি চাওয়া মূর্খতা।হাদীস শরীফে এসেছে।

হযরত আনাস রা. বলেন,রাসুল সা. এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন।দেখলেন সে অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়েছে।স্বাস্থ্য শুকিয়ে পাখির মত হয়ে গেছে। রাসুল সা.বললেন তুমি কি আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে কিছু কামনা করেছিলে?সে বলল হ্যাঁ।

আমি বলেছিলাম,হে আল্লাহ আপনি আমাকে আখিরাতে যে শাস্তি দিবেন তা দুনিয়াতেই ত্বরান্বিত করুন। রাসুল সা. বল্লেন, সুবহানাল্লাহ!তোমার এমন শক্তি নেই যে, তুমি তা বরদাশত করবে? তবে তুমি এরুপ দোয়া করবে।হে আল্লাহ আপনি আমাদের দুনিয়াতে ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন। আর জাহান্নাম থেকে আমাদের নাজাত দিন। এরপর রাসুস রা. তার জন্য দোয়া করলেন। আল্লাহ তাকে নিরাময় দান করলেন। (মুসলিম শরীফ-৬৫৯১) সুতরাং অতি আবেগি হয়ে কখনো এমন দোয়া করব না।

দুই.দোয়াতে ছবর/ধৈর্য কামনা নাকরা ।এভাবে বলব না ‘হে আল্লাহ আমাকে ধৈর্য দাও।হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে। হযরত মুয়াজ ইবনু জাবাল রা. বলেন,রাসুল স. এক ব্যক্তিকে দোয়া করতে শুনলেন “হে আল্লাহ আমাকে ছবর/ধৈর্য দান করুন। তখন রাসুল সা. বললেন তুমি তো আল্লাহর কছে মুছিবত কামনা করছ।

বরং তুমি আফিয়াত(সুস্বাস্থ্য) চাও। (তিরমিযী শরাফ-৩৫২৭)হাদীস থেকে বোঝা যায় ছবর চাওয়ার অর্থহল মুসিবত চাওয়া।তবে যদি মুসিবত কখনো এসে পড়ে, তখন ছবরের দোয়া করা যায়।পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলে বলেন অর্থঃ হে আল্লাহ আমাদের মনে ধৈর্য সৃষ্টি করে দিন এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন আর আমাদের সাহায্য করুন কাফের জাতির বিরুদ্ধে। সুরা বাকারা-২৫০. সাধারণ অবস্থাতে ছবরের দোয়া করা অনুচিত।

তিন. দোয়াতে তাড়াহুড়ো না করা।তাড়াহুড়োর অর্থহল দোয়া করার পর এমন বলা,অনেক দোয়া করেছে কিন্তু কবুল হয়নি। হযরত আবু হুরাইরা রা. বর্ণনা করেন,রাসুল রা. বলেছেন: তোমাদের দোয়া তখনই কবুল করা হয়; যখন সে তাড়াহুড়ো না করে।অর্থাৎ এরুপ না বলে যে আমি আমার রবের কাছে দোয়া করলাম অথচ কবুল করা হয়নি। মুসলিম শরীফ-৬৬৮৩.

চার. দোয়াতে মৃত্যু কামনা না করা। হযরত আবু হুরাইরা রা. বলেন রাসুল সা. বলেছেন: তোমরা কেউ মৃত্যুর কামনা করবে না।আর মৃত্যুর পূর্বে তজ্জন্যে দোয়াও করবে না। কেননা মৃত্যুর সাথে সাথ মানুষের আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। আর মুমিনের জীবতি থাকা কল্যাণ,নেকিই বৃদ্ধি করে (মুসলিম শরীফ) হ্যাঁ!

কোন অবস্থাতে যদি একান্ত দোয়া করতেই হয় তাহলে এ ভাবে দোয়া করবে (হে আল্লাহ যতদিন আমার জীবন উত্তম হয় ততদিন জীবিত রাখুন,আর যখন আমার মৃত্যু উত্তম হয় তখন মৃত্যু দান করুন। (বুখারি ও মুসলিম) আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন!

লেখক: শিক্ষক,দারুস সুন্নাহ মাদরাসা, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া।

-এটি


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ