আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্য আমেরিকাকে আর বিশ্বাস করে না। কারণ আমেরিকা যে দেশের ওপর তাদের মতাদর্শ চাপিয়ে দেয় পরিণতিতে সেদেশ খুবই খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।
আফগানিস্তান তার জ্বলন্ত প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের জন হফকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব অ্যাডভ্যান্স ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো হাফেজ আল গয়েল এমনটাই মনে করেন।
তিনি বলছেন, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা নামের ময়লা বিদায় হতে খুব বেশি সময় নেয়নি। আফগান জাতি গঠন প্রকল্প বাস্তাবাবয়নে আমেরিকানদের তৎপরতা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। দুই দশকের পর এই যে তাদের দুঃখজনক বিদায়, এটার প্রভাব আরব বিশ্বের আনাচে কানাচে সবসময় থাকবে।
আরব নিউজে এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানে তারা ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষুব্ধ ও ক্ষয়প্রাপ্ত ওয়াশিংটন তার পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে প্রভাব বিস্তার করাকে এখন আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং মনে করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী যে প্রভাব বলয় তৈরি করেছিল তার আর নেই। এই অঞ্চলে হেয়াইট হাউসের সব কর্তৃত্ব ভেঙে পড়েছে।
বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তার মিশন শেষে কোনো দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনি, আফগানিস্তানেও তাই। বরং আফগানিস্তান আরও ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সংঘাত কবলিত রাষ্ট্র এখন আফগানিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ছিল আফগানিস্তানে জাতি গঠনে নিরবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালানো কিন্তু সেটা হয়নি। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ বিরোধী ভূমিকার নামে যুক্তরাষ্ট্র যা করেছে তাতে মানবতার কল্যাণ হয়নি।
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র যেসব লোকবল, যুদ্ধাস্ত্র এবং অর্থ ব্যবহার করেছে সবই সংকীর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে যে যুদ্ধ তারা চাপিয়ে দিয়েছে, এটা তাদের এ অঞ্চলে পরিণতির দিকে নিয়ে গেছে। যা তাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইকে আরও বিলম্বিত করেছে। সবশেষ পরিণতি হয়েছে কাবুল ত্যাগের মাধ্যমে।
গয়েল বলছেন, তবে বাইডেনের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি সর্বদা বিতর্কের বিষয় হয়ে থাকবে। আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে কেউ বাইডেনের ভুল হিসেবে দেখছে, আবার কেউ বলছে বাইডেন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাইডেনের রাজনৈতিক ব্যর্থতা সফলতার ওপর তা নির্ভর করবে। তবে আফগান থেকে আমেরিকা চলে গেল বলে সবকিছু শেষ হয়নি, মস্কো ও বেইজিং চেষ্টা করবে এ অঞ্চলে তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে।
নিবন্ধে বলা হয়, বাইডেনের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় এটুকু বলা যায়, আফগানিস্তান ও এই অঞ্চলে দায়েশ ও আল কায়েদা তাদের ঘাঁটি আরও শক্ত করবে নিশ্চিত। আশঙ্কা আরেকটি আছে, সেটি হলো নতুন তালেবান উদারপন্থা অবলম্বনের চেষ্টা করছে। সেটি আবার ইরানের মতো কঠোর ব্যবস্থা তৈরিতে সহায়ক হতে পারে।
-এটি