রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ।। ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ২ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য: ইবনে শাইখুল হাদিস ৪-৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা পরস্পরের জীবনসঙ্গী হিসেবে সফলতার মন্ত্র ফখরুলের ‘দক্ষিণপন্থীদের উত্থান’ মন্তব্যে কড়া সমালোচনা ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিবের পি আর পদ্ধতিতেই জবাবদিহিতামূলক সরকার কায়েম হবে: পীর সাহেব চরমোনাই  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হেফাজত নেতাদের বৈঠক বেফাকের ৪৯তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষার নিবন্ধনের কাগজপত্র বিতরণ শুরু বাসচাপায় মাদরাসা ছাত্রী নিহত, সড়ক অবরোধ একা পারছি না, বিভিন্ন পর্যায়ে আলেমদের অংশগ্রহণ জরুরি: ধর্ম উপদেষ্টা জুলাই সনদে মাদরাসা ছাত্রদের স্বীকৃতিও দিতে হবে: গাজী আতাউর রহমান

নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের প্রতি একটি খোলা চিঠি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুফতি জুবায়ের বিন আব্দুল কুদ্দুস ||

প্রিয় নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যবৃন্দ!

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

আমি আপনাদের কাছে এই খোলা চিঠিটি লিখছি ঈমান, সততা এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধের ভাবনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে। প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আপনাদের দেয়া প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমি আপনাদের সমীপে, আপনাদের কল্যাণ কামনায় কয়েকটি কথা পেশ করছি।

১. আপনাদের নাম দেখে আমার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার যে, আপনারা সকলেই মুসলমান এবং সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। সেই সাথে আপনারা সকলেই জাগতিক শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত।

২. নারী জাতির সুখ-শান্তি, উন্নতি ও অগ্রগতির উদ্দেশ্যে আপনারা যে সকল প্রস্তাবনা পেশ করেছেন তার মধ্যে অনেকগুলো বিষয় সরাসরি কুরআন সুন্নাহ এর সাথে সাংঘর্ষিক এবং শিষ্টাচার বিবর্জিত, অযৌক্তিক ও মাতৃজাতিকে কলুষিত ও কলঙ্কিত করার জন্য তাতে যথেষ্ট উপাদান আছে। 

৩. আপনাদের পেশকৃত প্রস্তাবনা ঈমানবিরোধী। কেউ মেনে নিলে কারো ঈমান থাকবে না। যারা এই প্রস্তাব গুলোর উপর খুশি হয়েছে কিংবা সন্তোষ প্রকাশ করেছে, তারাও প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে ইসলামের নির্দেশনার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। 

৪. আমাদেরকে মুসলমান হতে হলে পরিপূর্ণভাবে ইসলামকে মেনে নিতে হবে। ইসলাম এমন কিছু নয়, যার একটি অংশ মানলাম আর একটি অংশ অস্বীকার করলাম। যে কেউ ইসলামের কোনো বিধান মানে না, কিংবা ব্যক্তিগত মত বা সামাজিক সংস্কারকে ইসলামের ওপর প্রাধান্য দেয়, সে গভীর বিপদে পড়ে যায়—তা শুধু দুনিয়াতেই নয়, আখেরাতেও। আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করেন- یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا ادۡخُلُوۡا فِی السِّلۡمِ کَآفَّۃً ۪ وَ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّہٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ

অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ২০৮)

এই আয়াতের তাফসীরে আল্লামা মুফতি শফি রহ. লিখেন, পরিপূর্ণ ইসলামের মধ্যে প্রবেশ করার অর্থ হচ্ছে, হাত-পা, চোখ-কান, মন-মস্তিষ্ক সহ সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা সন্তুষ্ট চিত্তে আল্লাহর আনুগত্য করা। এমন যেন না হয় যে, ইসলামের কিছু বিষয় মেনে নিল আর কিছু বিষয় মেনে নিতে গড়িমসি করতে থাকল। তাছাড়া কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের নামই হচ্ছে ইসলাম। এর সম্পর্ক বিশ্বাস, ইবাদত, আচার-অনুষ্ঠান, সামাজিকতা, রাষ্ট্র, রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প কর্ম সব কিছুর সাথে । ইসলাম তো পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা দিয়েছে।তাই পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,ؕ  اَفَتُؤۡمِنُوۡنَ بِبَعۡضِ الۡکِتٰبِ وَ تَکۡفُرُوۡنَ بِبَعۡضٍ

অর্থাৎ, তবে কি তোমরা ধর্মগ্রন্থের কিছু অংশে বিশ্বাস আর কিছু অংশকে অবিশ্বাস কর? (সুরা বাকারা, আয়াত নং ৮৫)

অন্যত্র আল্লাহ তা'আলা আরো পরিষ্কার করে বলেন, وَ مَنۡ لَّمۡ یَحۡکُمۡ بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡکٰفِرُوۡنَ

অর্থাৎ, আর আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুসারে যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফের।(সূরা মায়িদা, আয়াত নং ৪৪)

প্রিয় বোনেরা! এই আয়াতসমূহের প্রতি লক্ষ্য করলে নিজেদের ঈমানের ব্যাপারটি‌ও নিজেদের সামনে ফুটে ওঠবে।

৫. পরকালের সুখ-শান্তি ও মুক্তি একমাত্র ইসলাম মানার উপর নির্ভরশীল। ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম কিংবা মতবাদ পরকালে গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করেন- وَ مَنۡ یَّبۡتَغِ غَیۡرَ الۡاِسۡلَامِ دِیۡنًا فَلَنۡ یُّقۡبَلَ مِنۡہُ ۚ وَ ہُوَ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ

অর্থাৎ, আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ৮৫)

৬. কারো প্ররোচনায় হোক কিংবা কোন কিছু প্রাপ্তির আশায় হোক যে প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন এটি আপনাদের এবং মুসলিম জাতির জন্য কখনোই মঙ্গলজনক নয়। বরং এটি দুনিয়া এবং আখেরাতে চরম ক্ষতি ও ধ্বংস ডেকে আনবে। নারী জাতির উন্নতি তো দূরের কথা, নারী-পুরুষ সবাইকে চতুষ্পদ জন্তু থেকেও নিম্নস্তরে নিয়ে যাবে। 

৭. আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে তাঁর সকল বান্দাকে অনেক ভালোবাসেন। পাপী এবং অপরাধীদেরকে যেন তিনি একটু বেশি-ই ভালবাসেন। কুরআন হাদিসের বিভিন্ন স্থানে যেন শুধু তাদেরকেই ডাকেন। পবিত্র কালামে আল্লাহ এরশাদ করেন, قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ 

অর্থাৎ, হে নবী আপনি ঘোষণা করে দিন, হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছ, তারা আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয় তিনিই বড় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আয-যুমার, আয়াত নং ৫৩)

আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে কী পরিমান ভালোবাসেন! আপন বান্দাদেরকে ক্ষমা করার জন্য তিনি কত চমৎকার কৌশল অবলম্বন করেন তা একটা হাদিসের মাধ্যমে বোঝা যায়। রাসুল সা. বলেন,قَالَ النَّبِي صلى الله عليه وسلم"‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللَّيْلِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ النَّهَارِ وَيَبْسُطُ يَدَهُ بِالنَّهَارِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ اللَّيْلِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا ‏

অর্থাৎ, আল্লাহ তা’আলা রাতে তাঁর নিজ দয়ার হাত প্রসারিত করেন, যেন দিবসের অপরাধীরা তার নিকট তাওবাহ করে নেয়। এমনিভাবে তিনি দিনের বেলায় নিজ হাত প্রসারিত করেন, যেন রাতের অপরাধীরা তাঁর নিকট তাওবাহ করে নেয়। এমনিভাবে দৈনন্দিন চলতে থাকবে পশ্চিম দিগন্ত থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৮৮২)

৮. প্রিয় বোনেরা! “তাওবা” আল্লাহ তায়ালার নিকট অতি প্রিয় একটি বিষয়। যে তাওবা করে আল্লাহ তাআলা তাকে অনেক ভালোবাসেন। তওবা করার অর্থ হলো, “গোনাহের কারণে লজ্জিত হয়ে তা বর্জন করা আর ভবিষ্যতে এমন গোনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প করা।” এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন- اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَہِّرِیۡنَ

অর্থাৎ, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ক্ষমা প্রার্থিগণকে এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ২২২)

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-
قال رَسُول اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ حَيْثُ يَذْكُرُنِي وَاللَّهِ لَلَّهُ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنْ أَحَدِكُمْ يَجِدُ ضَالَّتَهُ بِالْفَلاَةِ وَمَنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ شِبْرًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَمَنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِذَا أَقْبَلَ إِلَىَّ يَمْشِي أَقْبَلْتُ إِلَيْهِ أُهَرْوِلُ

অর্থাৎ, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ রববুল আলামীন ইরশাদ করেছেনঃ আমার উপর বান্দার ধারণা অনুযায়ী আমি তার সাথে আচরণ করি। সে যেখানেই আমাকে স্মরণ করে আমি তার সাথে আছি। আল্লাহর কসম, শূন্য মাঠে তোমাদের কেউ হারানো বাহন ফেরৎ পাওয়ার পর যে আনন্দিত হয় আল্লাহ তা’আলা বান্দার তাওবার কারণে এর চেয়েও বেশি আনন্দিত হন। যদি কেউ একবিঘত পরিমান আমার দিকে অগ্রসর হয় তাহলে আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই। যদি কেউ এক হাত পরিমান আমার প্রতি অগ্রসর হয়, তাহলে আমি এক গজ পরিমান তার প্রতি অগ্রসর হই। যদি কেউ আমার দিকে পায়ে হেঁটে আসে তবে আমি তার দিকে দৌড়ে আসি। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং৬৮৪৫)

৯. মৃত্যু এমন এক সত্য যাকে দুনিয়ার সবাই বিশ্বাস করে। এই মৃত্যু আকস্মিকভাবে একদিন জীবনের সকল সুখ-আনন্দ ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধুলোর সাথে মিশিয়ে দেবে। এই ছোট্ট জীবনটা আল্লাহ পরীক্ষা করার জন্য দান করেছেন। তিনি দেখেন কে তাঁর আনুগত্য করে আর কে তাঁর অবাধ্য হয়।

এ জগতে যারা আল্লাহর অবাধ্যতা ও নাফরমানি পরিহার করে, তাঁর সন্তুষ্টির পথে ফিরে আসবে এবং তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলবে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে পরকালে চিরস্থায়ী সুখের স্থান জান্নাত দান করবেন। পক্ষান্তরে যারা কোরআন সুন্নাহর বিরুদ্ধাচরণ করবে, এর কোন বিধানকে বৈষম্য মূলক মনে করবে কিংবা কুফুর শিরকের জীবন অবলম্বন করবে, তারা চিরকাল জাহান্নামে জ্বলবে।

 দুনিয়ার এই জীবনে আল্লাহ তায়ালা কাউকে বাধা দিবেন না। কিন্তু পরকালে ঠিকই সবকিছুর বিচার করা হবে। পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন- وَ قُلِ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکُمۡ ۟ فَمَنۡ شَآءَ فَلۡیُؤۡمِنۡ وَّ مَنۡ شَآءَ فَلۡیَکۡفُرۡ ۙ اِنَّاۤ اَعۡتَدۡنَا لِلظّٰلِمِیۡنَ نَارًا ۙ اَحَاطَ بِہِمۡ سُرَادِقُہَا ؕ وَ اِنۡ یَّسۡتَغِیۡثُوۡا یُغَاثُوۡا بِمَآءٍ کَالۡمُہۡلِ یَشۡوِی الۡوُجُوۡہَ ؕ بِئۡسَ الشَّرَابُ ؕ وَ سَآءَتۡ مُرۡتَفَقًا 

অর্থাৎ, হে নবী! বলুন, সত্য তোমাদের রব-এর পক্ষ থেকে সমাগত; কাজেই যার ইচ্ছে ঈমান আনুক আর যার ইচ্ছে কুফরী করুক। নিশ্চয় আমি জালেমদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি আগুন, যার বেষ্টনী তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। তারা পানীয় চাইলে তাদেরকে দেয়া হবে গলিত ধাতুর ন্যায় পানীয়, যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে; এটা নিকৃষ্ট পানীয়! আর জাহান্নাম কত নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল!(সূরা কাহাফ, আয়াত নং ২৯)

১০. দুনিয়া এমন এক জগত যেখানে চাইলে সবকিছু পরিবর্তন করা যায়। কিন্তু পরকাল এমন এক জগত যেখানে চাইলেই কিছু করা যাবে না। কৃতকর্মের ফল সেখানে ভোগ করতেই হবে। জাহান্নামীরা জাহান্নামে কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করবে এবং আল্লাহ তাদের জবাবে বলবেন- وَ ہُمۡ یَصۡطَرِخُوۡنَ فِیۡہَا ۚ رَبَّنَاۤ اَخۡرِجۡنَا نَعۡمَلۡ صَالِحًا غَیۡرَ الَّذِیۡ کُنَّا نَعۡمَلُ ؕ اَوَ لَمۡ نُعَمِّرۡکُمۡ مَّا یَتَذَکَّرُ فِیۡہِ مَنۡ تَذَکَّرَ وَ جَآءَکُمُ النَّذِیۡرُ ؕ فَذُوۡقُوۡا فَمَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ نَّصِیۡرٍ

অর্থাৎ, আর সেখানে (জাহান্নামে) তারা আর্তনাদ করে বলবে, হে আমাদের রব! আমাদেরকে (জাহান্নাম থেকে)বের করুন, আমরা যা করতাম তার পরিবর্তে সৎকাজ করব। আল্লাহ্ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এতো দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ উপদেশ গ্ৰহণ করতে চাইলে উপদেশ গ্ৰহণ করতে পারতো? আর তোমাদের কাছে সতর্ককারীও এসেছিল। কাজেই তোমরা শাস্তি আস্বাদন কর; আর জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা ফাতির, আয়াত নং ৩৭)

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন- رَبَّنَاۤ اَخۡرِجۡنَا مِنۡہَا فَاِنۡ عُدۡنَا فَاِنَّا ظٰلِمُوۡنَ 

অর্থাৎ, হে আমাদের প্রতিপালক! এই আগুন হতে আমাদেরকে উদ্ধার কর; (আর আমাদেরকে আবার দুনিয়াতে পাঠাও। সেখানে গিয়ে) যদি আমরা পুনরায় অবিশ্বাস করি, তাহলে অবশ্যই আমরা সীমালংঘনকারী হব।(সূরা মুমিনুন, আয়াত নং ১০৭)

তাদের কথার উত্তর আল্লাহ তাআলা বলবেন,  قَالَ اخۡسَـُٔوۡا فِیۡہَا وَ لَا تُکَلِّمُوۡنِ

অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমরা হীন অবস্থায় এখানেই থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলবে না। (সূরা মুমিনুন, আয়াত নং ১০৮)

১১. প্রিয় বোনেরা! নবী রাসুলগণ আর দুনিয়াতে আগমন করবেন না। মানুষদেরকে দ্বীনের দিকে আহবান করার দায়িত্ব উম্মতের আলেমদের। একজন আলেম হিসেবে আমি আপনাদেরকে খোলা চিঠির মাধ্যমে আহ্বান করছি। আপনারা ইসলামের দিকে ফিরে আসুন। খাঁটি দিলে তওবা করুন। 


প্রিয় বোনেরা, আল্লাহর কাছে তাওবার দরজা সর্বদা খোলা। অনিচ্ছায় এমন মতামতের পক্ষে অবস্থান নেওয়া ইসলামবিরোধী, তাই এখনই তওবা করে নেওয়া উচিত।

আল্লাহ বলেন: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর প্রতি খাঁটি তাওবা কর।” (সূরা তাহরীম: ৮)

আল্লাহ বলেন, তিনি সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করেন যদি বান্দা আন্তরিকভাবে ফিরে আসে।

আখেরাতের ভয়াবহতা মনে রাখুন। কিয়ামতের দিন কেউ বলতে পারবে না—"আমার আরেকবার সুযোগ দরকার"। সে দিন আফসোসই থাকবে, কিন্তু কাজ করার সুযোগ থাকবে না।

আমি আপনাদের এই চিঠি দিচ্ছি ঈমানি ভাই হিসেবে। আমি চাই না, আমার প্রিয় বোনেরা এমন পথ অনুসরণ করুন যার পরিণাম জাহান্নাম হতে পারে।

আসুন, আমরা সবাই ফিরে যাই কুরআন ও সুন্নাহর ছায়ায়। ইসলামের আলোতে গড়ে তুলি নারীর সম্মান, ন্যায়বিচার ও আদর্শ সমাজ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন। আমীন।

লেখক: শিক্ষক, জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ, ঢাকা
খতিব, আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ ঢাকা 
পরিচালক, দাওয়াতুস সুন্নাহ বাংলাদেশ

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ