সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

জুলাই ঘুরে ঘুরে আসবে, তবে ভুলে গেলে চলবে না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মাহমুদা মুন || 

জুলাই ক্যালেন্ডারে ফিরে আসে প্রতিবছর, কিন্তু তার চেতনা কেবল একটা মাসের আবদ্ধ স্মৃতি নয়। এটা একটা অনন্য আত্মত্যাগের গল্প, একটা আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি, আর একটা জাতিগত বেদনার নাম। চেতনার কথা বলে কেউ যদি নিজের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করে, সেটা শুধু চেতনাকেই অপমান করা নয়—শহীদদের আত্মত্যাগকেও অসম্মান করা। তাই, জুলাই মানে শুধু স্মরণ নয়, লালনও; শুধু আবেগ নয়, দায়বদ্ধতাও।

জুলাইয়ের সঠিক চেতনা ধারণ করতে হবে—চেতনার নামে নয়, চেতনার জন্য। শহীদদের রক্তের দাম গড়িমসি করে আদায় করা যায় না। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। কেন তারা রাস্তায় নেমেছিলেন, কেন তাঁদের জীবন দিতে হয়েছিল, সেই প্রশ্নগুলো ভুলে গেলে চলবে না। জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের জাতীয় স্মৃতির অমোচনীয় অংশ।

জুলাইয়ের স্মৃতির পাতা উল্টালেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কিছু ভয়াল দৃশ্য—যেন এক বিভীষিকাময় সময়ের চিত্রনাট্য। বিশেষ করে নীলক্ষেতের সেই রাত, ১৮ জুলাইয়ের সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া নিপীড়ন—আজও তা দুঃস্বপ্ন হয়ে ফিরে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো তখন ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল, ছাত্রলীগের সশস্ত্র দখলদারিত্বে। সব বন্ধ—কারেন্ট নেই, নিরাপত্তা নেই, শুধুই আতঙ্ক।

সেই রাতে একযোগে অপারেশন চালিয়েছিল পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি। টানা গুলি, লাঠিচার্জ, গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস—সবকিছুই যেন এক অঘোষিত যুদ্ধাবস্থার চিত্র। হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ঘটনাও শোনা গেছে—সাধারণ ছাত্রদের দমাতে এমন আক্রমণ?

চোখের সামনে কত সহযোদ্ধাকে রক্তাক্ত হতে দেখেছি। অনেককে মৃতদেহে পরিণত হতে দেখেছি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই—হাসপাতালে নেওয়ার আগেই নিভে গেছে তাঁদের জীবনপ্রদীপ। সেই দৃশ্য, সেই আর্তনাদ এখনো কানে বাজে। আজও রাতে ঘুম ভেঙে যায়—ট্রমা থেকে মুক্তি মেলে না।

আমরা তাঁদের আর ফিরে পাব না। তাঁদের পরিবারও আর পূর্ণতা পাবে না কখনো। কিন্তু আমরা যদি তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে না যাই, তাহলে তাদের আত্মাহুতি শুধু একটি দিনের স্মৃতিচারণে সীমাবদ্ধ থাকবে। সেটা যেন না হয়।

জুলাই শুধু অতীতের বেদনা নয়, ভবিষ্যতের শপথ। এই শপথ হোক দৃঢ়, এই চেতনা হোক বিকোণোর ঊর্ধ্বে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ