সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

নিম গাছ: প্রকৃতির প্রাকৃতিক এসি ও পরিবেশ রক্ষার নীরব নায়ক


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||

নিম গাছ— এমন একটি বৃক্ষ, যার উপকারিতার শেষ নেই। এটি শুধু একটি গাছ নয়, বরং একটি প্রাকৃতিক আশীর্বাদ। পরিবেশ রক্ষায় এর অবদান এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে একে "প্রাকৃতিক এসি" বলা হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক নিমগাছ একসঙ্গে ১০টি এসি চালানোর সমান কাজ করে। শুধু তাই নয়, এর ছায়াতলে আশপাশের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। 

পরিবেশগত উপকারীতা:
নিমগাছের আরেকটি অসাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো—এটি প্রচুর দূষণ সহ্য করতে পারে এবং পরিবেশ থেকে নানা ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করতে সক্ষম। এর পাতাগুলো সীসার মতো ভারী ধাতু শোষণ করে নেয়, যা বাতাসে থাকা অত্যন্ত বিপজ্জনক উপাদান। ধূলিকণা, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার অক্সাইড ও নাইট্রোজেনের মতো দূষক পদার্থও নিমগাছ শোষণ করতে পারে।

এই গাছ কেবল দূষণ নিয়ন্ত্রণেই নয়, বরং আশেপাশের পরিবেশ শীতল ও বিশুদ্ধ করতেও দারুণ কার্যকর। যদি কোনো বাড়ির চারদিকে পরিকল্পিতভাবে নিমগাছ লাগানো হয়, তাহলে তা এক ধরনের সবুজ বেষ্টনী বা “Green Belt” তৈরি করে। এতে ওই বাড়ির আশেপাশে একটি মাইক্রোক্লাইমেট গড়ে ওঠে, যার ফলে ভেতরের তাপমাত্রা আশপাশের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কম থাকে।

বর্তমান বৈশ্বিক উষ্ণতা, জলবায়ু পরিবর্তন ও শহুরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে, নিমগাছ হতে পারে একটি সহজ ও কার্যকর সমাধান। বর্ষাকালেই গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। তাই এখনই সময় নিজ বাড়ির চারপাশে নিমগাছ লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব এক ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে তোলার। আজকের গাছ একদিন হবে পরিবারের জন্য প্রাকৃতিক এসি—নিঃশব্দ, ব্যয়বিহীন এবং উপকারী। 

স্বাস্থ্য্গত উপকারীতা:
নিম গাছের স্বাস্থ্য উপকারীতাও বিস্ময়কর। নিম গাছ প্রাকৃতিক রক্ত পরিশোধক। নিম পাতার রস খেলে রক্ত পরিশোধিত হয় এবং চর্মরোগ কমে। নিম গাছের পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও রাখে অনন্য ভূমিকা। নিয়মিত নিমপাতা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিম গাছের বিভিন্ন অংশ চর্মরোগ প্রতিরোধেও অসামান্য ভূমিকা রাখে।একজিমা, চুলকানি, ব্রণসহ নানা চর্মরোগে নিমের পাতা, ছাল ও তেল ব্যবহার হয়। তাছাড়া নিম ডাঁটির কাঠ দিয়ে দাঁত মাজলে মাড়ি শক্ত হয় ও দাঁতের রোগ কমে।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব:
নিম গাছের অর্থনৈতিক গুরুত্বও অপরিসীম। নিম বীজ থেকে প্রাপ্ত তেল প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নিমপাতা ও ছাল মাটির উর্বরতা বাড়াতে সহায়ক। নিম তেল, নিম সাবান, নিম প্রসাধনী, ওষুধ ইত্যাদির বাজার রয়েছে দেশ-বিদেশে।

নিম গাছ শুধু একটি গাছ নয়, এটি প্রকৃতি, পরিবেশ ও মানুষের জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। নিম গাছ (Azadirachta indica) একটি বহু গুণাগুণে সমৃদ্ধ বৃক্ষ। এটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে খুব পরিচিত ও উপকারী গাছ হিসেবে বিবেচিত। এখনই সময় বাড়ির আঙিনায়, রাস্তার ধারে ও উন্মুক্ত জায়গায় বেশি বেশি নিম গাছ লাগানোর।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ