আজ মিনায় মুসল্লিদের সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো হজের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত মিনার আকাশ। এবার হজের ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব যুক্ত করেছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন—প্রথমবারের মতো নারী সদস্যরা পালন করছেন হজ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
সৌদি আরবের জাতীয় রূপান্তর পরিকল্পনা ‘ভিশন ২০৩০’-এর অংশ হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর যে অঙ্গীকার, তারই বাস্তব রূপ দেখা যাচ্ছে এবারের হজে। নিরাপত্তা, চিকিৎসা, দিকনির্দেশনা এবং স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও নিয়োজিত রয়েছেন পূর্ণ দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে।
বিশেষ করে মসজিদে নববী ও আশপাশের এলাকায় নারী নিরাপত্তাকর্মীরা ভিড় নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট তদারকি এবং নারীদের নামাজের স্থান ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের উপস্থিতি শুধু নিরাপত্তাই নিশ্চিত করছে না, বরং নারীদের জন্য আলাদা নিরাপত্তাবোধও তৈরি করছে।
হজজুড়ে চলা চিকিৎসা সহায়তায়ও নারীদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। নারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ২৪ ঘণ্টা সেবা দিচ্ছেন মুসল্লিদের। প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তারা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। বিশেষ করে নারীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে তাদের এ অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ধর্মীয় দিকনির্দেশনা এবং বিদেশি হজযাত্রীদের তথ্য ও ভাষাগত সহায়তায়ও নিয়োজিত রয়েছেন নারী আলেম ও দোভাষীরা। শরিয়াহ জ্ঞান এবং ভাষায় দক্ষ এই নারীরা হজযাত্রীদের সঠিকভাবে গাইড করছেন, যার ফলে হজ পালনে স্বাচ্ছন্দ্য ও আত্মবিশ্বাস বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন অংশগ্রহণকারীরা।
হজের এই নতুন রূপ দেখে অনেকেই বলছেন, সৌদি আরবে নারী ক্ষমতায়নের পথে এটি একটি মাইলফলক। ধর্মীয় রীতি মেনে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ শুধু হজ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করছে না, বরং একটি আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এনএইচ/