প্রশ্ন:
বর্তমানে একটি দুঃখজনক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে—মানুষ একে অপরকে বিকৃত নামে ডাকছে, বিশেষ করে যখন কারো মতাদর্শ বা চিন্তাধারা ভিন্ন হয়। কেউ ভিন্নভাবে চিন্তা করলেই তাকে বিদ্রূপ করে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বা বিকৃত নামে অপমান করার প্রবণতা বাড়ছে। ইসলামের দৃষ্টিতে এ ধরনের আচরণ কেমন?
এম মাআয।
উত্তর:
ইসলামের দৃষ্টিতে কাউকে বিকৃত নামে ডাকা একটি গুনাহের কাজ। এটি মজা বা দুষ্টুমির ছলেও বৈধ নয়। কারও ব্যক্তিত্ব ও সম্মানে আঘাত করে এমন কোনো আচরণ ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেন:
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا یَسۡخَرۡ قَوۡمٌ مِّنۡ قَوۡمٍ عَسٰۤی اَنۡ یَّكُوۡنُوۡا خَیۡرًا مِّنۡهُمۡ وَ لَا نِسَآءٌ مِّنۡ نِّسَآءٍ عَسٰۤی اَنۡ یَّكُنَّ خَیۡرًا مِّنۡهُنَّ ۚ وَ لَا تَلۡمِزُوۡۤا اَنۡفُسَكُمۡ وَ لَا تَنَابَزُوۡا بِالۡاَلۡقَابِ ؕ بِئۡسَ الِاسۡمُ الۡفُسُوۡقُ بَعۡدَ الۡاِیۡمَانِ ۚ وَ مَنۡ لَّمۡ یَتُبۡ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۱۱﴾
"তোমরা একে অপরকে অপবাদসূচক নামে ডেকো না। ইমান আনার পর মন্দ নামে পরিচিত হওয়া গর্হিত কাজ।" সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১১
বিশিষ্ট তাফসিরবিদ ইমাম তাবারি (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন,
“বিকৃত নামে ডাকা মুমিনের জন্য জঘন্য কাজ, তা সে মজা করেই করুক বা অপমানের উদ্দেশ্যেই করুক।”
(তাফসিরে তাবরি, খণ্ড: ২২, পৃষ্ঠা: ৩০২)
যদি কেউ পূর্বে এমন গুনাহ করে থাকে, তবে তার উচিত—ক্ষমা চাওয়া ও সংশোধন হওয়া। কেননা, এটি একজন মুসলিম ভাইয়ের সম্মানহানির শামিল।
ইসলামী শিক্ষার আলোকে সমাজে সম্মান ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য এই ধরনের ভাষা ও আচরণ থেকে দূরে থাকা ফরজ-সদৃশ দায়িত্ব।
আল্লাহ তাআলা আমাদের জবান ও আচরণ হেফাজতের তাওফিক দিন। আমিন।
এনএইচ/