সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

শিশুদের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর হাসি ও স্নেহ: এক চিরন্তন ভালোবাসার গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

OUR ISLAM প্রতিবেদক

যিনি ছিলেন মানবজাতির শ্রেষ্ঠ আদর্শ, তিনি শুধু রাজনীতি, সমাজনীতি কিংবা আখলাকের ক্ষেত্রে নয়—শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও কোমলতার ক্ষেত্রেও ছিলেন অতুলনীয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ ছিলেন এমন এক মহান মানব, যার চোখে শিশুরা ছিল ফুলের মতো পবিত্র, আনন্দের উৎস, দয়ার পাত্র।

ভালোবাসার ছায়াতলে ছোট্ট হৃদয়

নবীজির জীবনের এমন বহু ঘটনা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে, যেখানে তিনি শিশুদের প্রতি অসাধারণ মমত্ব, স্নেহ আর হাসিমাখা আচরণে সিক্ত করেছেন। হজরত হাসান ও হুসাইন (রাঃ) তাঁর হৃদয়ের জান, তাঁর কাঁধে চড়ে খেলেছেন—আর তিনি সেজদা দীর্ঘ করেছেন, শুধু তাদের আনন্দের খাতিরে।

এক সাহাবি একবার বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, "আমার তো দশজন সন্তান, কিন্তু আমি কাউকেই চুমু দিইনি।" উত্তরে রাসুল ﷺ বললেন: "যে দয়া করে না, সে দয়া লাভ করবে না।" (বুখারি)

একবার নবীজি ﷺ মসজিদে নামাজ পড়াচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর প্রিয় নাতি এসে তাঁর পিঠে চড়ে বসে। রাসুলুল্লাহ ﷺ সেজদা দীর্ঘ করেন, যতক্ষণ না শিশুটি স্বেচ্ছায় নেমে আসে। নামাজ শেষে তিনি বলেন,

"সে আমার পিঠে চড়েছিল, আমি চাইলাম না তাকে তাড়াহুড়ো করে নামিয়ে দিই।"

কি অপূর্ব এক ভালোবাসা! আজ আমরা যেখানে শিশুকে 'বাধা' মনে করি, সেখানে রাসুল ﷺ তাঁর ভালোবাসার পাখিদের জন্য নামাজের সময়ও কোমলতা দেখিয়েছেন।

রাসুল ﷺ কখনো কখনো শিশুদের সঙ্গে হাঁটতেন, খেলতেন, এমনকি দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। এক শিশুকে মজা করে তিনি বলেছিলেন,

"আয় আবু উমাইর, আমরা খেলি!"

এই শব্দে ছিল আন্তরিকতা, কোমলতা ও বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ।

তিনি কখনো শিশুর দোষ খোঁজেননি, বরং তাদের ভালো দিকগুলো তুলে ধরতেন, উৎসাহ দিতেন। কোনো শিশুর কান্না শুনলে তাঁর মন ব্যথায় ভরে যেত।

 নাম ধরে ডাকতেন, পাশে বসিয়ে রাখতেন

রাসুল ﷺ শিশুদের নাম ধরে ডাকতেন, খুঁজে খুঁজে কাছে ডাকতেন। কাউকে তিরস্কার নয়, বরং উৎসাহ ও মমতা ছিল তাঁর আচরণের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

একবার তিনি বলেন,

"আমি নামাজ শুরু করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু একটি শিশুর কান্না শুনে নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ফেললাম, যাতে তার মা কষ্ট না পায়।" (বুখারি)

বর্তমান সমাজে শিশুরা প্রায়ই অবহেলা ও অবজ্ঞার শিকার হয়। অথচ রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদের শিখিয়েছেন, শিশুরা ভালোবাসা পেলে গড়ে ওঠে সুস্থ, স্বাভাবিক ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে।

রাসুল ﷺ–এর জীবনের এই অধ্যায় আমাদের মনে করিয়ে দেয়  "একটি শিশুর হাসি শুধু তার মুখেই নয়, আমাদের হৃদয়েও আলো ছড়িয়ে দেয়, যদি আমরা তা দেখার চোখ রাখি।"

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ