সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

কোথায় হারালো মুসলমানদের সত্যের প্রতি সেই প্রতিশ্রুতি?


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
প্রতীকি ছবি

|| আরিফ আজাদ ||

হাদিসশাস্ত্র ইসলামের ইলম তথা জ্ঞানের এক সুবিশাল এবং সুবিস্তৃত ক্ষেত্র। নবীজি সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিটা কথা, দাঁড়ি-কমাসহ নির্ভুলভাবে কীভাবে যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দিয়েছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সেটা এক অপার রহস্য।
এই কাজে মহান রব এমনকিছু মানুষকে নিয়োজিত করেছিলেন যারা নিজেদের জীবনকে শুধু এই কাজের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। যাদের আমরা হাদিসশাস্ত্রের ইমাম বলে চিনি। ইমাম বোখারি, ইমাম মুসলিম, নাসায়ি, ইমাম তিরমিজিসহ অসংখ্য হাদিসের ইমাম এই ধারাটাকে সমৃদ্ধ করে গিয়েছেন।

এই ইমামগণ সেই সুপ্রাচীন আমলে, যখন গাড়ি ছিল না, বিমান ছিল না, ইলেকট্রিসিটি ছিল না, কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো জাহাজে চড়ে, কখনো ঘোড়া বা গাধার পিটে সরওয়ার হয়ে, দুর্গম মরুভূমি পথ পাড়ি দিয়ে, রুক্ষ আবহাওয়ার সাথে পাঞ্জা লড়ে দেশ বিদেশে পাড়ি জমাতেন হাদিস সংগ্রহের জন্য।

তারা পথের ক্লান্তিকে গায়ে মাখাতেন না, দুর্গম পথে বিপদের চোখ রাঙানিকেও তারা আমলে নিতেন না, খাবারের কষ্ট, পানির কষ্ট, ঘুম আর আরামের অভাব—কোনোকিছুই তাদেরকে এই অদম্য যাত্রা থেকে বিরত করতে পারত না।

তবে একটা জিনিস তাদেরকে আটকে দিতো হাদিস সংগ্রহের যাত্রায়। আপনি জানেন সেটা কি? সেটা হলো—মিথ্যা।

হাদিস সংকলনের ইতিহাসে মুহাদ্দিসদের এমন ঘটনাও আছে, একজন হাদিসের ইমাম কোনোভাবে জেনেছেন যে অমুক দেশে এক লোক আছে যার কাছে বিশুদ্ধ সূত্রের বরাতে আল্লাহর রাসুলের একটা হাদিস পৌঁছেছে। সেই ইমাম বহু কাঠখড় পুড়িয়ে, বহু পথ মাড়িয়ে সেই দেশে গিয়ে সেই লোকটার ঠিকানা খুঁজে বের করলেন শুধু সেই হাদিসটা শোনার জন্য, যে হাদিসটা বিশুদ্ধ সূত্রের মাধ্যমে তার কাছে এসে পৌঁছেছে।

তবে, তার ঠিকানায় গিয়ে উক্ত ইমাম জানলেন যে, যদিও তার কাছে যে হাদিস পৌঁছেছে সেটার সূত্র বিশুদ্ধ, কিন্তু লোকটার মিথ্যা কথা বলার বাতিক আছে। অর্থাৎ, সেই লোকটা লোকসমাজে মিথ্যাবাদী বলে খ্যাত ছিল।

তারপর কী করেছেন সেই হাদিসের ইমাম, জানেন?
সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা দেশ, ভিন্ন একটা ভূখণ্ড থেকে এতো কষ্ট করে যাওয়ার পরেও, যে হাদিসটা সংগ্রহের জন্য গিয়েছেন সেটার সনদ অত্যন্ত মজবুত আর বিশুদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত ইমাম সেই হাদিসটা সংগ্রহ না করে ফেরত চলে এসেছিলেন শুধু এই কারণে যে—লোকটার মিথ্যা কথা বলার বদ-অভ্যাস ছিল। মিথ্যা আর মিথ্যাবাদীকে ইসলাম কীভাবে ডিল করে, সেই উসুলটা এই ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারি।

কিন্তু হায়, কী দুর্ভাগ্য আমাদের, আজ আমাদের এতো দুর্দশা যে, চারপাশে যারা অধিক মিথ্যা কথা বলে, তাদেরকেই আমরা অবলীলায় মেনে চলছি, নেতা বানাচ্ছি, অগ্রাধিকার দিচ্ছি। কোথায় হারালো মুসলমানদের সত্যের প্রতি সেই প্রতিশ্রুতি?

লেখক: অ্যাকটিভিস্ট ও লেখক

এমএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ