সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

‘জান বাঁচাতে’ বাথরুমে, কালেমা পড়তে পড়তেই মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মার্কেটের পাঁচ তলার একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করতেন শাহেদ। আগুনে যখন চারদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন মার্কেট থেকে বের হতে না পেরে বাথরুমে আশ্রয় নেন তিনি।
সেখানেই দম বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।

শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর বর্ণনা দেন শাহেদের ভাই আল আমিন।

তিনি বলেন, পাঁচ তলার একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করতো আমার ভাই। আগুন দেখে নিচে নামার চেষ্টা করেছিল সে। কিন্তু ধোঁয়ার কারণে নামতে পারেনি। বাঁচার জন্য একটি বাথরুমে ঢুকেছিল, সেখানেই দম বন্ধ হয়ে মারা যায়।

আল আমিন বলেন, ফায়ার সার্ভিস ঠিকভাবে আগুন নেভানোর কাজ করতে পারলে আমার ভাইয়ের কিছু হতো না। আগুন লাগার পর মার্কেটের অনেককে উদ্ধারে আমি কাজ করেছি। কিন্তু মার্কেটের ভেতরের রাস্তাগুলো এতো সরু যে ফায়ার সার্ভিসতো দূরের কথা, আমরা যারা আগুন নেভানোর কাজে গিয়েছি সবার অনেক কষ্ট হয়েছে।

আজওয়ার টেলিকম নামে যে দোকানটিতে শাহেদ কাজ করতেন, সেই দোকানের মালিক সাজ্জাদ মিয়া বলেন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি, তাই গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়ায় চলে গিয়েছিলাম। 
শাহেদ যখন আমাকে ফোন দিয়েছিল, তখন সঙ্গে সঙ্গে আমার নির্দেশনা ছিল- সে যেন ছাদে চলে আসে। দোকানের সব গলি তার মুখস্থ। চোখ বন্ধ করেও সে ছাদে চলে আসতে পারবে- এমন ধারণা ছিল আমার।

কিন্তু পরে আমি সাতকানিয়া থেকে ছুটে এসে দেখলাম- ধোঁয়ার কারণে হাঁটাচলা তো দূরের কথা, চোখের জ্বালা যন্ত্রণায় টিকে থাকাটাই দায় হয়ে গেছে। চোখেমুখে কাপড় মুড়িয়ে ভেতরে গিয়ে দেখি- টয়লেটের মধ্যে পড়ে আছে শাহেদ।

সর্বশেষ যখন আমার সঙ্গে কথা হয়, তখন সে শুধু কালেমা পড়ছিল। আর বলছিল- আমি টয়লেটে, আমার জন্য দোয়া করবেন। কালেমা পড়তে পড়তে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের মার্কেটে এ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। চার ঘণ্টা পর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।

জানা গেছে, রেজওয়ান কমপ্লেক্সের ব্রাদার্স টেলিকম নামে একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। এরপর সেই আগুন পাশের মার্কেটেও ছড়িয়ে পড়ে। রেজওয়ান কমপ্লেক্স মার্কেটটি আটতলা বিশিষ্ট। সেখানে মোবাইলের যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকান রয়েছে।

আটতলা ভবনটিতে আগুন লাগার পর ওপরে কয়েকটি কক্ষে ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

মারা যাওয়া তিনজন হলেন- মোহাম্মদ রিদোয়ান, মোহাম্মদ শাহেদ ও মোহাম্মদ ইকবাল। আহত হয়েছেন দুই নারী। তারা চমেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে আমতল এলাকার বাহার লেইনে রেজওয়ান কমপ্লেক্স নামে একটি মার্কেটে আগুন লাগার খবর পাই।

ঘটনাস্থলে আগ্রাবাদ, নন্দনকানন ও চন্দনপুরা স্টেশনের নয়টি ইউনিট দ্রুত গিয়ে কাজ করেছে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ