জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের কথা বইয়ে পড়েছি, কিন্তু যে আকাঙ্ক্ষায় জনগণের রাস্তায় নেমে আসা সে আকাঙ্ক্ষাগুলো বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি, ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতার ফলেই ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের শাসনব্যবস্থার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। তাই আমরা চাই, এবারের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয়। জনগণের ভেতরে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
এটা জাতির প্রতি আমাদের সবারই অঙ্গীকার।
শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটা দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কিভাবে রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে এই রকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।
এনসিপি আহ্ববায়ক বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি। যে দলের প্রধান শক্তি ও ভিত্তির জায়গাটা হচ্ছে এই দেশের তরুণেরা। সেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের যে বক্তব্য ছিল, আমরা ফ্যাসিবাদের বিলোপ ও একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
এনসিপি সংস্কার বলতে মৌলিক সংস্কার বোঝে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে সংস্কার করলে রাষ্ট্রকাঠামোর গুণগত আমূল পরিবর্তন সম্ভব হবে।
কারণ আমরা দেখেছি, বিগত সময়ে আমাদের সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ ঘটেছিল। আমাদের সংবিধানে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক একটি কাঠামোর বীজ বপন ছিল। ফলে সেই রাষ্ট্রকাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রেখে যেই ক্ষমতায় যাক তার ভেতরেও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থাকবে, স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে ওঠার প্রবণতা থাকবে। সেই জায়গায় রাষ্ট্রের সংস্কার, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে আমরা এনসিপি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে যে সুপারিশ আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, সেগুলোতে আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি। যেসব জায়গায় আমরা আংশিক একমত বা দ্বিমত হয়েছি সেখানে আমরা আমাদের সুপারিশ সংক্ষিপ্তভাবে দিয়েছি। আজকে হয়তো বা আমরা বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ পাব। সেই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এসএকে/