মিরপুর ১ নম্বর এলাকায় অবস্থিত মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল-ইসলামী ঢাকা মাদরাসার হেফজ বিভাগের এক ছাত্র আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে মাদরাসার ওয়াশরুমে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মৃত ছাত্রের নাম হাফেজ মোহাম্মদ তৌফিক সিয়াম। তাঁর গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়। বাবার নাম সালাহউদ্দিন সরদার। পরিবারে সে ছিল বড় ছেলে।
মাদরাসার শুভাকাঙ্ক্ষী মো. হাসান জানান, ঘটনার পরপরই মাদরাসা কর্তৃপক্ষ পুলিশ প্রশাসনকে খবর দেয় এবং সিসিটিভি ফুটেজ তাদের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশের স্পেশাল টিম এসে তদন্ত করে এবং কোনো ধরনের ‘সন্দেহজনক সংশ্লিষ্টতা’ পায়নি বলে জানায়।
তবে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া মৃত শিশুর ছবিকে কেন্দ্র করে অনেকেই একে ‘হত্যা’ বলে দাবি করছেন। মো. হাসান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এটি একটি গুজব। র্যাব, পুলিশ, গণমাধ্যম সবাই এসে দেখে গেছে। তদন্তে মাদ্রাসার কোনো ওস্তাদ কিংবা ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।”
তিনি আরও জানান, মৃত শিশুর বাবা সালাহউদ্দিন নিজেও কোনো অভিযোগ করেননি। বরং তিনি জানিয়েছেন, তার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিল এবং তার 'প্যারানরমাল' (জিন সংশ্লিষ্ট) সমস্যা ছিল। মোঃ হাসান বলেন, শিশুটি শুক্রবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসায় রেখে যাওয়ার সময় তার বাবাকে বলেছিল—"আমাকে রেখে যাচ্ছেন, পরে এসে আর পাবেন না।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্র বলেন , “ফজরের নামাজের পর তাওসিফ ক্লাসে ঘুমিয়ে পড়ে। ওস্তাদ তাকে মুখে পানি দিয়ে আসতে বলেন। পরে সে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। তখন তাকে রুম থেকে বের করে বাইরে দাঁড়াতে বলা হয়। এরপর নাস্তার সময় সে ওয়াশরুমে গিয়ে আর বের হয়নি। সন্দেহ হওয়ায় দরজা ভেঙে দেখা যায়, সে গলায় ফাঁস দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার তাওসিফের বাবা তাকে দেখতে আসেন এবং সারাদিন ঘোরাঘুরির পর সন্ধ্যায় মাদ্রাসায় রেখে যান। তিনি এই আত্মহত্যার ব্যাপারে কোন অভিযোগ করেননি। তিনি বলেছেন তার ছেলে মানসিক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। তার জিনেরও সমস্যা ছিল।
দারুস সালাম থানার পুলিশ মাদ্রাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করেছে। কোনো ধরনের অপরাধের প্রমাণ মেলেনি বলেই জানা গেছে। ফলে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিশুর মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় পাঠানো হয় এবং সেখানেই জানাজা সম্পন্ন হয়।
এনএইচ/