গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্টের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীর গুলিতে দুই চোখ হারানো ১১ তরুণকে অভিভাবকসহ ওমরাহ পালনের সুযোগ করে দিয়েছে একটি বেসরকারি উদ্যোগ। মোট ২২ জন এবার পবিত্র ওমরাহ পালনে যাচ্ছেন সৌদি আরবে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে বিমানের টিকিট ও অতিরিক্ত খরচ বাবদ আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেওয়া হয়। প্রতিজন পেলেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের টিকিট এবং স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান, অতিরিক্ত সচিব আব্দুন নাসের খান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী এবং চক্ষু হাসপাতালে জুলাই আহতদের চিকিৎসা সমন্বয়ক ডা. যাকিয়া সুলতানা নীলা।
চোখ হারানো এই ১১ জন হলেন— মোজাম্মেল হক, তৌহিদ উদ্দিন ভূঞা, মো. বেল্লাল হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, দুর্জয় আহম্মেদ, ওমর ফারুক, সাব্বির আহমেদ, আমজাদ হোসেন, হিমেল, নিলু পারভীন এবং মিজানুর রহমান বাদল। তারা কেউ একা চলাফেরা করতে পারেন না, প্রতিদিনের জীবনে তাদের নির্ভর করতে হয় পরিবারের সদস্য বা সহকর্মীদের ওপর। এজন্য প্রতিজনের সঙ্গে একজন করে অ্যাটেন্ডেন্ট রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই তরুণরা শুধুমাত্র নিজেদের চোখ হারাননি, তারা হারিয়েছেন স্বাভাবিক জীবনের স্বাধীনতা। কিন্তু আত্মসম্মান হারাননি। তাদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে এবং মানসিক ও আধ্যাত্মিক শান্তির জন্যই এই ওমরাহ যাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, এই উদ্যোগ কেবল একটি ভ্রমণ নয় বরং এটি তাদের প্রতি রাষ্ট্র ও সমাজের দায়বদ্ধতার একটি প্রতীক। ভবিষ্যতেও যেন এই তরুণদের পাশে থাকা যায়, সেই আহ্বানও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।
এনএইচ/